হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,,,,
{ مَا رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَتَحَرَّى صِيَامَ يَوْمٍ فَضَّلَهُ عَلَى غَيْرِهِ إِلّا هَذَا الْيَوْمَ يَوْمَ عَاشُورَاءَ، وَهَذَا الشَّهْرَ يَعْنِي شَهْرَ رَمَضَانَ }
আমি নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রোজা রাখার জন্য এত অধিক আগ্রহী হতে দেখিনি যত দেখেছি এই আশুরার দিন এবং এই মাস অর্থাৎ রামাদান মাসের রোজার প্রতি। – বুখারী শরীফ ১৮৬৭
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো ইরশাদ করেন,,,
{ صيام يوم عاشوراء، إني أحتسب على الله أن يكفر السنة التي قبله }
আশুরার দিনের রোজার ব্যাপারে আমি আল্লাহ তা’য়ালার কাছে আশা করি, তিনি পূর্ববর্তী এক বছরের পাপ ক্ষমা করে দেবেন। – মুসলিম শরীফ ১৯৭৬
এটি আমাদের প্রতি মহান আল্লাহ তা’য়ালার অপার করুণা। তিনি একটি মাত্র দিনের রোজার মাধ্যমে পূর্ণ এক বছরের গুনাহ মাফ ককরে দেন।অন্য
হাদিস শরীফে এসেছে-এই দিনে আল্লাহ সুবহানু তা’আলা একটি জাতির তাওবা কবুল করেছেন এবং ভবিষ্যতেও অন্যদের তাওবা কবুল করবেন। (জামে তিরমিযী ১/১৫৭)আর এই দিনে রোযা রাখলে পেছনের এক বছরের গুনাহ মাফ হয়ে যায়। (সহীহ মুসলিম ১/৩৬৭; জামে তিরমিযী ১/১৫৮)
হযরত আবু কাতাদা (রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু) প্রিয় রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করে বলেন, ‘প্রতি মাসে তিন দিন এবং এক রামাযান থেকে আরেক রামাযান পর্যন্ত রোযা রাখলে সারা বছর রোযা রাখার সাওয়াব অর্জিত হয়। আরাফার দিন রোযা রাখলে আল্লাহর নিকট আশা করি যে, তিনি এর বিনিময়ে আগের ও পরের এক বছরের গুনাহ মোচন করে দিবেন। আর আশুরার দিন রোযা রাখলে আল্লাহর নিকট আশা করি যে, তিনি এর বিনিময়ে পূর্বের এক বছরের গুনাহ মোচন করবেন।’ (সহীহ মুসলিম)
হযরত আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু) থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন-
“রামাযানের পর আল্লাহর মাস মুহাররমের রোযা হল সর্বশ্রেষ্ট”
(সহীহ মুসলিম, ২য় খন্ড, ৩৬৮ পৃষ্ঠা/জামি’তিরমিযী, ১ম খন্ড, ১৫৭ পৃষ্ঠা)
***হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনায় হিজরত করার পর দেখলেন,ইহুদীরা আশুরার দিন রোযা রাখে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে রোযার কারণ জিজ্ঞাসা করলেন। তখন তারা বলেছিল, এটি মহিমান্বিত একটি দিন। এই দিনে মুসা (আলাইহিস সালাম) ও তার কওম নিস্তার পান। আর ফেরআউন ও তার দল ডুবে মারা যায়। সেই থেকে মুসা (আলাইহিস সালাম) শুকরিয়াস্বরূপ এই দিনে রোযা রাখতেন। সে হিসেবে আমরাও রোযা রাখি। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, মুসা আলাইহিস সালাম)-এর ব্যাপারে তোমাদের চেয়ে আমরা অধিক হকদার। অতপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজেও রোযা রাখলেন এবং অন্যদেরকে রোযা রাখার নির্দেশ করলেন।’ (সহীহ বুখারী, হাদীস : ৩৩৯০; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস : ২৬৪৪; সহীহ মুসলিম,হাদীস :
*** ইব্ন আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন: রাসুলে কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: “আশুরার দিন রোযা রাখ এবং এ ক্ষেত্রে ইহুদীদের বিরোধীতা করে এর আগের দিন বা পরের দিন রোযা রাখ।” (মুসনাদ আহমাদ, সহীহ ইব্ন খুযায়মা ইত্যাদি)
ইমাম আহমাদ ইব্ন হাম্বল (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন: মাসের শুরু চিনতে অসুবিধা হলে (নয়, দশ ও এগার এ) তিন দিন রোযা রাখবে। যেন নয় ও দশ তারিখে রোযা নিশ্চিতভাবে সম্পন্ন করা যায়। মুগনী (৩/১৭৪)
আল্লাহ তায়াল আমাদের সকল কে আশুরার রোযা রাখার তৌফিক দেন আমিন।